জীবনটা রেস নয়, জার্নি!
লেখক লিও তলস্তয় সাইকেল চালানো শিখেছিলেন ৬৭ বছর বয়সে।
শিল্পী পাবলো পিকাসো বিয়ে করেছিলেন ৭৬ বছর বয়সে।
সবচেয়ে বেশি বয়সে নোবেল পাওয়া মানুষটির নাম লিওনিদ হুরউইজ, তিনি বেশি না মাত্র ৯০ বছর বয়সে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন।
সবচেয়ে বেশি বয়সে অস্কার পুরস্কার পেয়েছেন ইমানুয়েল রিভা, মাত্র ৮৫ বছর বয়সে!
একটা নির্দিষ্ট বয়সের পরেই আমরা ও আমাদের ছেলেমেয়েদের বলতে থাকি - আমাকে দিয়ে কিচ্ছু হবেনা।
এভারেস্টে উঠবো কীভাবে? বয়স আছে?
তাদের বলি - সবচেয়ে বেশি বয়সী যে মানুষটি এভারেস্টে উঠেছেন তাঁর নাম ইউকিরো মুইরা, তার বয়স ছিল মাত্র ৮১ বছর!
সবচেয়ে বেশি বয়সে সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন ডরিস লেসিং, মাত্র ৮৮ বছর বয়সে!
একবার না পারলে হাল ছেড়ে দিয়ে, দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ার দরকার নেই। দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়ার আগে আমাদের আফসোস হওয়া উচিত - কি কি করিনি?
কোথায় কোথায় কোথায় যাইনি ?
স্নো ফল দেখেছি কি?
আইফেল টাওয়ার দেখেছি কি?
সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় দেখেছি কি?
হাল ছেড়ে দিলে হবে না। জীবনটা এ প্লাস, বি প্লাসের না। কারণ সফলতার মার্কশিট বলে কিছু নেই। যদি থাকতো তাহলে ড্রপ আউট স্টুডেন্ট বিল গেটস বিশ্বের সবচেয়ে ধনী হতেন না, মার্ক জুকারবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্তফা দেওয়ার দশ বছর পর অনারারি ডক্টরেট পেতেন না অথবা মৃত্যুর পর ভ্যানগঘ পৃথিবীর সবচেয়ে এক্সপেন্সিভ শিল্পী হতেন না।
জীবনের বেঁচে থাকার দিনগুলোতে সবচেয়ে আনন্দের হয়- সবচেয়ে পরিশ্রম করার দিনগুলি, বারবার হেরে যাওয়ার দিনগুলি। প্রাইমারীর বৃত্তি পরীক্ষায় সময় স্বল্পতার মধ্যেও একটা সরল অঙ্ক ৬ বার করেও মেলাতে পারিনি ! তারপরেও বৃত্তি কিন্তু ঠিকই পেয়েছিলাম! কতদিন গেছে একটা ভালো লেখা লিখতে না পারার দুঃখে পুরো ডায়েরি কুচি কুচি করে ছিঁড়ে নতুন ডায়েরি নিয়ে বসতে হয়েছে!
অথচ এখন কিছু লিখলেই শত শত লাইক কমেন্ট পড়ে। বন্ধুদের অনুষ্ঠানে গেলে অনেকেই আমার লেখার প্রশংসা করে!
আসলে জীবনটা রেস নয়, জীবনটা জার্নি! জীবনের সবচেয়ে আনন্দ থাকে জীবনে হাল ছেড়ে না দেওয়ায়। আর যাইই হোক - জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লেগে থাকার মজাটা কিন্তু আলাদা!