প্রশ্নঃ
হারাম রিলেশন করে বিয়ে করার পর তওবা করে নিবো। এতে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন না?
উত্তরঃ
১. বিয়ে বহির্ভুত প্রেমের সম্পর্ক স্পষ্ট কবিরা গুনাহ। এটি ক্ষমা করা আর না করা সম্পূর্ণ আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলার উপর নির্ভর করে। শিরিক ব্যতীত অন্য যে কোন গুনাহ তিনি ইচ্ছা করলে অবশ্যই ক্ষমা করে দিতে পারেন, নিঃসন্দেহে তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল এবং অসীম দয়ালু। তাই আশা করা যায় খালেস দিলে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। তার ক্ষমার ব্যাপারে কখনো নিরাশ হওয়া যাবে না।
২. কিন্তু বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক হারাম জেনেও আপনি পরিকল্পনা করলেন প্রেম করে বিয়ে করবেন, তারপর দুজনে মিলে একদিন কেঁদে জায়নামাজ ভিজিয়ে ফেলবেন। ব্যাস, আল্লাহ তো ক্ষমাশীল। তাহলে জেনে রাখুন, আপনি আল্লাহর বিরুদ্ধে পরিকল্পনাকারীদের একজন হয়ে গেলেন। আর আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন- 'তারাও পরিকল্পনা করে, আল্লাহও পরিকল্পনা করেন, বস্তুত আল্লাহই সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী'। তিনি যদি আপনাকে ওই তওবা করার সুযোগটা না দেন!?
এমন পরিকল্পনা করে অনেকেই শয়তানের ধোকায় পরে আছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এমন, কাউকে এখন পর্যন্ত দেখার এমন দেখিনি যে, জেনেশুনে হারাম রিলেশন করে বিয়ের পর তারা হেদায়েত প্রাপ্ত হয়েছে। উল্টো তাদেরকে আরো বেশি জাহেলিয়াতে, ফেতনায় পতিত হতে দেখেছি। পূর্বে যেটুকু দ্বীন মেনে চলতো বিয়ের পর সেটুকু তারা হারিয়ে ফেলে। এমনটা তো হওয়ারই কথা, যে সম্পর্কের শুরুই হয় আল্লাহর নাফরমানি দিয়ে তাতে কিভাবে শান্তি, তৃপ্তি আশা করা যায়! মালিক ক্ষমাশীল, দয়ালু বলে জেনেশুনে তার অবাধ্য হওয়াটা কোনো প্রভুভক্ত গোলামের কাম্য নয়। অন্তত কোনো খাটি ঈমানদার এমনটা কখনোই করতে পারেনা। তাই এমন চিন্তাভাবনা মনে থেকে থাকলে এখনই ঝেড়ে ফেলুন ইনশাআল্লাহ।
পাপ হচ্ছে এক ধরণের ভালোবাসা। আপনি এর প্রেমে পড়ে যান। এতে আসক্ত হয়ে যান। বার বার করতে থাকেন। সূরা ফুরকানের এই অংশটুকু (৬৩ নং আয়াত থেকে শেষ পর্যন্ত) আসলে ভালোবাসার প্রতিযোগিতা নিয়ে। কারণ আপনি অমুক গুনাহটি, অমুক আনন্দটি এতো বেশি ভালোবাসেন যে এটাকে ছেড়ে দিতে চান না। এই ভয়ে যে ছেড়ে দিলে হয়তো মনে অনেক কষ্ট পাবেন। এক রাশ দুঃখ এসে আপনাকে জড়িয়ে ধরবে।
পক্ষান্তরে, আল্লাহ বলছেন আমি তোমার মনের সেই শূন্যতাকে আমার নিজেকে দিয়ে পূরণ করে দিবো। আমি আমার সঙ্গ দিয়ে এটি ঠিক করে দিবো— আল্লাহ প্রস্তাব দিচ্ছেন।
এখন, এই সমীকরণের ক্ষেত্রে আপনার নিজেকেই নিজের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ রকম পরিস্থিতিতে আপনাকে ফেলা হবে। আর কেউ ঘুণাক্ষরেও টের পাবে না, উপলব্ধি করতে পারবে না যে এমন একটি লড়াই আপনার মাথায় ঘটে চলছে। কেউ জানবে না। শুধু আল্লাহ জানবেন।
— নোমান আলী খান