নিজেকে একটু গুছিয়ে নিন,,,,,,
শুরু করুন শুরু থেকে,,,,,,,
মাথায় অনেক আইডিয়া, মনের মধ্যে হাজারো স্বপ্ন। রাতের পর রাত ভেবে ভেবে অস্থির, এবার একটা কিছু করবই। নিজের ভুলগুলোকে এবার শুধরে নেবই।
কাজে কর্মে আরো মনোযোগী হব।
সাফল্য ধরা দেবেই। কিন্তু পর মুহূর্তেই আবার বিষন্নতা! কাজকর্ম হচ্ছে হবে করে বা করছি করব করে কিছুই আগাচ্ছে না। একপা যাই তো তিনপা পিছাই। নিজের উপর নিজেই বিরক্ত।
মন মেজাজ অস্থির থাকে, কোন কিছুতে মন বসে না।
এদিকে মনের মধ্যে স্বপ্নের তাড়না। হঠাৎই ব্যর্থতার ভয় আকড়ে ধরে। অতীতের স্মৃতি গতিহীন করে দিতে চায় সব। কি করব?
কিভাবে করব? এমনো হাজারো সমস্যা নিয়ে প্রতিনিয়তই চলতে হয় উদ্যোক্তাদের।
সারাক্ষণই একটা অর্ন্তদ্বন্দ্বে ভোগার ফলে সাফল্যের গতিপথ রুদ্ধ হচ্ছে সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হতাশা।
পরিত্রানের উপায় কি? উপায় আছে –
অতীতকে ভুলে যান। অতীতে কি হয়েছে, কি হতে পারত বা কি হয়নি? এইসব নিয়ে একদমই ভেবে সময় নষ্ট করা যাবে না। অতীত থেকে যদি কিছু নেয়ার থাকে তা হল ভুলগুলি থেকে সংশোধনের পথ খুঁজে নেয়া। একবার তা পেয়ে গেলে অতীতের দরজা বন্ধ করে দিতে হবে। কেননা অতীতের ভাবনা মানুষকে বিষন্ন করে তোলে। আর বিষন্নতা থেকেই পরাজয়ের ভয়ের জন্ম হয়। মানুষ চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পায় ফলে বাস্তবতাকে অনুধাবন করতে অসমর্থ হয়। দিনে দিনে ব্যর্থতা আরো বাড়ে। ধীরে ধীরে জীবন হয়ে উঠে দুর্বিষহ। অতএব, অতীতের চ্যাপ্টার আজকে থেকেই বন্ধ।
জীবনে অনেক কিছু করার স্বপ্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার সবকিছু এখনই নয়। আগামী ৫/১০ বছর পরে নিজেকে কোথায় দেখতে চান? তার একটা রোডম্যাপ তৈরী করুন। এবার সেগুলো অর্জনের জন্যে কি কি করতে হবে তার একটা তালিকা এবং সেই তালিকাকে ভাগ করে ১ বছর / ৬ মাস / ৩ মাস / ১ মাস এরকম লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা প্রনয়ন করুন। বৃহৎ বটবৃক্ষ হয়ে ডালপালা বিস্তার করতে একটা সময় দরকার। সে সময়টা নিজেকে দিতে হবে। আর এই মহীরুহের সূচনা কিন্তু ছোট্ট একটা বীজ থেকেই হয়।
কি করতে পারতাম, পারি বা পারব! এই সব ভাবার অবকাশ নেই। এই মুহূর্তে আপনার ঠিক কি করা উচিত? তা নির্ধারণ করুন। এরপর কিভাবে সেটা করবেন? নির্ধারণ করে কাজে নেমে পড়ুন। যা আগামী কাল করা যায় তা আজকেই করুন, যা আজকে করা যায় তা এখনই শুরু করুন।
ছোট ছোট অর্জনকে প্রাধান্য দিন। একটা বড় কাজকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে নিয়মিত ভাবে করতে শুরু করুন। এক সময় তা পরিপূর্ণতা পাবে। কাজের প্রেসার না নিয়েও কাজটি সফলভাবে শেষ করা সম্ভব হবে। কখনই ভুলে গেলে চলবে না যে, ছোট ছোট বালু কনা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তুলে মহাদেশ সাগরও অতল।
এক সাথে অনেক কাজ বা প্রজেক্ট হাতে না নেয়াই উত্তম। একটা একটা করে করতে পারলে ফলাফল ভাল হবার সম্ভাবনা বেশি। যদি একত্রে অনেক কাজ করতেই হয় তাহলে একটা শিডিউল ফলো করা উচিত। প্রতিদিন প্রতিটা কাজের জন্যে একটা নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে করতে পারলে সপ্তাহ বা মাস শেষে দেখা যাবে যে মোটামুটি বেশ অনেক কাজ এগিয়েছে। এভাবে একাধিক কাজ বা প্রজেক্ট এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা যেতে পারে।
প্রতিটা অর্জনের জন্যে নিজেকে পুরস্কৃত করুন। যেমন, একটা প্রজেক্ট শেষ হয়ে গেলে একদিন বাইরে খেতে গেলেন বা কোথাও বেড়াতে গেলেন অথবা নিজের জন্যে শখের একটা কিছু কিনলেন। এতে করে সাবকনসাশ মাইন্ড মোটিভেটেড হবে। কাজের অনুকূল প্রভাব ও পরিবেশ মনে ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে। কাজ করতে উৎসাহ বাড়বে। কোন দলগত কাজের ক্ষেত্রেও এটি চর্চা করা যেতে পারে।
ব্যর্থতা নিয়ে কোন ভাবনা নয়। কিন্তু ভাবনা তো আসে! ভাবনা দূর করার উপায় কি? উপায় আছে, একটা কাগজ কলম নিন, ঘড়িতে দেখে নিজের জন্যে ঠিক ১৫ মিনিট সময় বরাদ্দ করুন। এবার ব্যর্থতার কারনগুলো ভাবুন এবং এর সম্ভাব্য প্রতিকার কি হতে পারে? সেগুলো লিপিবদ্ধ করুন।
১৫ মিনিট শেষ। এনালাইসিস থেকে প্রাপ্ত ফলাফল দিয়ে একটি এ্যকশন বা টু ডু লিস্ট তৈরী করুন। টু ডু লিস্টটা বাদে বাকি সব কাগজ এখন আপনার জন্যে অতীত ও অপ্রয়োজনীয় সুতরাং এগুলো নির্দিধায় ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দিয়ে টু ডু লিস্ট ধরে কাজ শুরু করুন।
নিয়ম, নিয়ম আর নিয়ম! নিয়মতান্ত্রিকতার বাইরে গিয়ে চুড়ান্ত সাফল্যকে ধরা যায় না। তাই সব কিছুতে নিয়মাবর্তিতা চর্চা করুন, নিয়ম মানতে শিখুন। নিয়ম করে খাওয়া দাওয়া, ঘুমানো, আড্ডা, পরিবারকে সময় দেয়া, গান শোনা, বই পড়া, সিনেমা দেখতে যাওয়া, প্রেম করা এবং যথারীতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন শেষ করুন। নিয়মিত পরিচর্যায় আজকের অঙ্কুরিত বীজ একদিন সুবিশাল বৃক্ষে পরিনত হবেই।
ভবিষ্যতের দিকে তাকান কিন্তু সেখানে বিচরন করবেন না। ভবিষ্যতে যা করতে চান বা হতে চান তার জন্যে কাজ শুরু করতে হবে এখনই। তাই বর্তমান কাজ ও অর্জনের দিকে দৃষ্টি ফোকাস রাখুন। বর্তমানের উপর জোর দিয়ে সদা বর্তমানেই বিচরন করুন। ভবিষ্যত নিয়ে কোন কিছুই ভাবার দরকার নেই। সোলাইমান আঃ এর একটা বাণী আছে, “আগামীকাল কি হবে যেহেতু আমি জানি না সেহেতু আগামী কাল নিয়ে ভাবা নিতান্তই বোকামী ছাড়া আর কিছু নয়”।
নিজের সমালোচনা নিজেই করতে শিখুন, প্রতিদিনের কাজের মূল্যায়ন প্রতিদিন করুন। কি হল, কি হল না? কেন হল না? কি করা উচিত এগুলো প্রতিদিন রাতে শোবার আগে ১০ মিনিট ভেবে পরবর্তী কর্মপরিকল্পনা করে তারপরে ঘুমুতে যাওয়ার অভ্যাস করুন। নিজের ভুল ত্রুটি নিজে খুঁজে বের করে সমাধানে যত্নবান হোন। প্রতিদিনে না পারলে প্রতি সপ্তাহে, তাও না পারলে প্রতি মাসে একটি করে পরিবর্তন নিজের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করতে চেষ্টা করুন।
সর্বপোরি বিশ্বাস করতে শিখুন যে, আপনি পারবেন। আপনাকে পারতেই হবে। কেননা, যে স্বপ্ন আপনি লালন করছেন তা একান্তই আপনার। আপনি ছাড়া আর কেউই তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে পারবে না। এই স্বপ্নের বাস্তবায়নের জন্যেই আপনার জন্ম। এই কাজের মাধ্যমেই আপনি আপনার জীবনের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছুতে পারবেন এবং আপনাকে তা আজ, ঠিক এখন থেকেই শুরু