সেই আদিকাল থেকে আমরা খরগোশ আর কচ্ছপের গল্প শুনে আসছি। মজার বিষয় হলো আমরা শুধুমাত্র গল্পের প্রথম অধ্যায়টাই শুনেছি। কিন্তু এই কাহিনীর আরো তিনটি অধ্যায় আছে যা কেউ জানে না।
প্রথম অধ্যায়ঃ এই অধ্যায়ে খরগোশ ঘুমিয়ে যায়, যার ফলে কচ্ছপ জিতে যায়। প্রথমবার হেরে যাওয়ার পর খরগোশ বিশ্লেষণ করে দেখল যে, তার পরাজয়ের মূল কারণ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস। তার মানে ওভার কনফিডেন্স যে কারো জন্যই ক্ষতিকর। আর কচ্ছপ বুঝল, লেগে থাকলে সাফল্য আসবেই!
দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ হেরে যাওয়ার পর এবার খরগোশ আবারও কচ্ছপকে দৌড় প্রতিযোগিতায় চ্যালেঞ্জ করল আর কচ্ছপও রাজী হল। এবার খরগোশ না ঘুমিয়ে দৌড় শেষ করল এবং জয়ী হল। খরগোশ বুঝল, মন দিয়ে নিজের সামর্থের পুরোটা দিয়ে কাজ করলে দ্রুত সফল হওয়া যায়। আর কচ্ছপ বুঝল, ধীরস্থিরভাবে চলা ভালো, তবে কাজে উপযুক্ত গতি না থাকলে প্রতিযোগীতামূলক পরিবেশে টিকে থাকা অসম্ভব!
তৃতীয় অধ্যায়ঃ কচ্ছপ এবার খরগোশকে আরেকবার দৌড় প্রতিযোগিতার আমন্ত্রণ জানাল। খরগোশও নির্দ্বিধায় রাজী হয়ে গেল। তখন কচ্ছপ বলল, "একই রাস্তায় আমরা দুই বার দৌড়েছি, এবার অন্য রাস্তায় হোক।" খরগোশও রাজী। অতএব নতুন রাস্তায় দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হল। যথারীতি খরগোশ জোরে দৌড় শুরু করে দিল। কচ্ছপও তার পিছন পিছন আসতে শুরু করল। কচ্ছপ যখন খরগোশ এর কাছে পৌঁছাল, দেখল খরগোশ দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু দৌড়ের শেষ সীমানায় যেতে পারেনি। কারণ দৌড়ের শেষ সীমানার আগে একটি খাল আছে। কচ্ছপ খরগোশের দিকে একবার তাকাল, তারপর তার সামনে দিয়ে পানিতে নেমে খাল পার হয়ে দৌড়ের শেষ সীমানায় পৌঁছে প্রতিযোগিতা জিতে গেল। খরগোশ বুঝল, শুধু নিজের শক্তির উপর নির্ভর করলেই হবে না, পরিস্থিতি আর বাস্তবতা অনুধাবন করাও ভীষণ প্রয়োজনীয়! আর কচ্ছপ বুঝল, প্রথমে প্রতিযোগীর দুর্বলতা খুঁজে বের করতে হবে, তারপর সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা সাজাতে হবে।
গল্প কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
চতুর্থ অধ্যায়ঃ এবার খরগোশ কচ্ছপকে আরেকটি দৌড় প্রতিযোগিতার জন্য আহ্বান জানাল ওই একই রাস্তায়। কচ্ছপও রাজী। কিন্তু এবার তারা ঠিক করল, প্রতিযোগী হিসেবে নয়, বরং এবারের দৌড়টা তারা দৌড়াবে সহযোগী হিসেবে!
শুরু হল প্রতিযোগিতা। খরগোশ কচ্ছপকে পিঠে তুলে দৌড়ে খালের সামনে গিয়ে থামল। এবার কচ্ছপ খরগোশের পিঠ থেকে নেমে খরগোশকে নিজের পিঠে নিয়ে খাল পার হল। তারপর আবার কচ্ছপ খরগোশের পিঠে উঠে বাকি দৌড় শেষ করল আর এভাবে তার দুজনেই একসাথে জয়ী হল।
শিক্ষা: ব্যক্তিগত দক্ষতা থাকা খুবই ভালো। কিন্তু দলবদ্ধ হয়ে একে অপরের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারলেই আসে সত্যিকারের সাফল্য যেখানে সবাই বিজয়ীর হাসি হাসতে পারে। আর এটাকেই বলে টিমওয়ার্ক।।