মলিকুলার সাইকিয়াট্রি (২০২৫) ও অন্যান্য শীর্ষ জার্নালে প্রকাশিত এক যুগান্তকারী গবেষণায় দেখা গেছে, শৈশবে পাওয়া মানসিক আঘাত বা নির্যাতন পুরুষদের শুক্রাণু কোষে দীর্ঘস্থায়ী এপিজেনেটিক ছাপ ফেলে যায়। যেসব পুরুষ শৈশবের ট্রমার শিকার হয়েছেন, তাদের শুক্রাণুতে DNA মিথাইলেশন প্যাটার্ন এবং স্মল RNA প্রোফাইল-এ স্পষ্ট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়।
এসব পরিবর্তন ভ্রূণ তৈরির সময়েও টিকে থাকে। অর্থাৎ, বাবার জীবনের স্ট্রেস-সম্পর্কিত জিনগত পরিবর্তন সন্তানের শরীরে স্থানান্তরিত হতে পারে। প্রাণীর উপর গবেষণায় দেখা গেছে, এই উত্তরাধিকারী প্রভাব শুধু আচরণেই নয়, বরং বিপাকক্রিয়া ও স্ট্রেস প্রতিক্রিয়াতেও প্রভাব ফেলে এমনকি একাধিক প্রজন্ম ধরে।
এটি ঘটে DNA সিকোয়েন্স না বদলিয়েই জিন এক্সপ্রেশনের ধরণ পাল্টে দেওয়ার মাধ্যমে। স্ট্রেস হরমোন ও প্রদাহজনিত প্রতিক্রিয়া শুক্রাণুর মধ্যে থাকা আণবিক নির্দেশনা পুনর্লিখন করে, ফলে ট্রমার একটি “বায়োলজিক্যাল মেমোরি” তৈরি হয়।
যদিও বিষয়টি ভয়ঙ্কর শোনায়, বিজ্ঞানীরা বলছেন এই প্রক্রিয়া বোঝা মানে সমাধানের নতুন পথ খোঁজা। থেরাপি, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে এ ধরনের এপিজেনেটিক ছাপ গর্ভধারণের আগেই উল্টে দেওয়া সম্ভব হতে পারে।
অতএব, ট্রমার চক্র ভাঙতে হলে শুধু মানসিকভাবে নয়, আণবিক স্তরেও সুস্থ হয়ে ওঠা জরুরি।
সূত্র:
“Exposure to childhood maltreatment is associated with specific epigenetic patterns in sperm” – Molecular Psychiatry (2025) এবং বাবার মানসিক চাপ থেকে উত্তরাধিকারের উপর একাধিক গবেষণা।