"বাচ্চারা কিছুই বোঝে না"—এ কথাটা যতটা প্রচলিত, ততটাই ভুল। শিশু মানে যেন একটুকরো কাঁচ—যেভাবে ছাঁচে ফেলা হয়, সেভাবেই গড়ে ওঠে। তাদের শেখার প্রথম মাধ্যম ভাষা নয়, আচরণ। আর এই আচরণের সবচেয়ে প্রভাবশালী শিক্ষক—বাবা ও মা।
আমরা অনেক সময় চাই শিশুটি ভদ্র হোক, দায়িত্বশীল হোক, ভালো-মন্দ বুঝুক। অথচ নিজেরাই যখন রাস্তায় ট্রাফিক আইন ভাঙি, রাগ করে চিৎকার করি বা মিথ্যে বলি—সেসবই শিশুর চোখে পড়ে। তারা বুঝতে না পারলেও অনুকরণ করে নিঃসন্দেহে।
একটি শিশু যখন দেখে তার বাবা কৃষিকাজ করে ক্লান্ত শরীরেও হাসছে, বা মা নিজের কাজ নিপুণভাবে করছে—সে শেখে পরিশ্রমের মূল্য, দায়িত্বের মাধুর্য। আবার যখন বাবা-মা পরস্পরকে সম্মান করে কথা বলেন, তখন সে বোঝে সম্পর্কের মর্যাদা।
গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর সামাজিক আচরণ, মূল্যবোধ, এমনকি আত্মবিশ্বাস গঠনে বাবা-মার ভূমিকা সরাসরি ও গভীর। শিশুরা এমন এক জীবন্ত রেকর্ডার, যা আপনার অজান্তেই প্রতিটি আচরণ ধারণ করে।
তাই, "শিশুকে শেখাতে চাইলে আগে নিজেকে ঠিক করতে হবে"—এটি শুধু একটি উক্তি নয়, বরং একটি অভিভাবকসুলভ দায়িত্ব। ভালো মানুষ তৈরি করতে চাইলে আগে আমাদের ভালো মানুষ হতে হবে। কারণ শিশু শুধু কথা শুনে শেখে না, দেখে ও মেনে চলে—চুপিচুপি, নীরবে।
শেষকথা:
আপনি যেমন হবেন, আপনার সন্তান একদিন তেমনই হওয়ার চেষ্টা করবে। তাকে আদর্শ উপহার দিন—নিজের মধ্য দিয়ে।